OrdinaryITPostAd

ঘরে বসে ই-পাসপোর্ট যেভাবে করবেন?

 


ঘরে বসে ই-পাসপোর্ট করতে হয় কি ভাবে  এ বিষয় সম্পর্কে কিছু তথ্য জানুন

ডিজিটাল যুগে সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে কাগজ কলমের ব্যাবহার তুলনামূলকভাবে কমই হয়ে থাকে । অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই সব কাজ হয়ে থাকে ফলে আমাদের খাটনি অনেক কমেছে । ঘরে বসে থেকে অনলাইনের মাধ্যমে শপিং , খাবার ওডার করা , অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজ করা যাই । চলুন দেখে আসি কি ভাবে ঘরে বসে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করা যাই । 

সূচিপত্র

 ১. ই-পাসপোর্ট কী ? 

 ২. ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা।

 ৩. এমআরপি পাসপোর্ট ও ই-পাসপোর্ট এর মধ্যে পার্থক্।  

  ৪ কি ভাবে এটি ব্যাবহার করতে হয়

  ৫  ই-পাসপোর্ট তৈরী করতে কি কি লাগবে?

  ৬  ই-পাসপোর্ট অনলাইনে কী ভাবে  তৈরী করতে হয়?

  ৭  মেয়াদ কত বছর ? 

  ৮  ফি কত টাকা লাগবে ?

  ৯  ই-পাসপোর্টে কী ভিসা লাগে ?

 আসুন উপর্যুক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ;

    ই-পাসপোর্ট কী ?

ই-পাসপোর্ট হল ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট । এক দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য এ পাসপোর্ট ব্যাবহার করা হয় । এটিতে সকল তথ্য একটি চিপের মধ্যে সংরক্ষণ করা থাকে । চিপটি স্ক্যান করলে সকল তথ্য পাওয়া যায় ।

     ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা ।

এটি আকারে ছোট বলে সহজেই বহন করা যায় । এর মাধ্যমে ই-গেট পার হওয়া যায় । ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এর মাধ্যমে দ্রুত তাদের ইমিগ্রেশন হয়ে যাবে।
তবে যখন একজন ভ্রমণকারী -পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সেটি কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি-পিকেডি) সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে।

-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিক থাকলে তিনি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন।

তবে কোন গরমিল থাকলে লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করবেন।

 

কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে।

 

ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই পিকেডি পরিচালনা করে। ফলে ইন্টারপোলসহ বিমান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য যাচাই করতে পারে।

 

এখানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের -পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বিবিসি বাংলাকে জানান যে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় ধরণের পাসপোর্ট জাল করা সহজ নয়
 
এমআরপি পাসপোর্ট ও ই-পাসপোর্ট এর মধ্যে পার্থক্য। 
 
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আর ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (-পাসপোর্ট) এর মধ্যে পার্থক্যকে তুলনা করা যেতে পারে অনেকটা চেকবই আর এটিএম কার্ডের মতো।চেকবই যেভাবে স্বাক্ষর যাচাইবাছাই করে ব্যাংক কর্মকর্তারা অনুমোদন করে টাকা প্রদান করেন। কিন্তু এটিএম কার্ড দিয়ে যে কেউ নিজে থেকেই টাকা তুলতে পারেন।তেমনি এমআরপি পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই বাছাই করে পাসপোর্টে সিল দিয়ে থাকেন।কিন্তু -পাসপোর্টধারী যন্ত্রের মাধ্যমে নিজে থেকেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। তবে পরবর্তী ধাপে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাই পাসপোর্টে আগমণ অথবা বর্হিগমন সিল দেবেন।

 

     কি ভাবে এটি ব্যাবহার করতে হয় ?

ই-পাসপোর্ট কি ভাবে ব্যাবহার করতে হয় তা উপরিউক্ত অপশন গুলতে দেওয়া আসে ।

 

     ই-পাসপোর্ট তৈরী করতে কি কি লাগবে ?

আপনার NID কার্ড / জন্ম নিবন্ধন , মোবাইল নম্বর , ছবি , ফিঙ্গারপ্রিন্ট , চখের আইরিস , আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা , পোস্ট অফিস কোড , আপনার পিতা-মাতার NID কার্ড অনুযায়ী সকল তথ্য এবং আপনি যদি বিবাহিত হন তাহলে আপনার স্ত্রীর NID কার্ড / জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী  সকল তথ্য দিতে হবে.

 ই-পাসপোর্ট অনলাইনে কী ভাবে  তৈরী করতে হয় ?

যে কোন ব্রাউজারে গিয়ে লিখুন ই- পাসপোর্ট সার্চ করুন । নিচের দিকে স্ক্রল করে দেখুন www.epassport.gov.bd অপশন আসেছে এখানে ক্লিক করুন । অপশনটিতে ক্লিক করার পর অনলাইন ই- পাসপোর্ট এর পোর্টাল পেজ আসবে । সেখানে Direct to online application অপশনে ক্লিক করুন । অপশনটিতে ক্লিক করলে পেজটিতে কিছু স্টেপ আসবে তার মধ্যে প্রথম স্টেপ হল Check availability of e-Passport in your region অর্থাৎ আপনার এলাকায় ই – পাসপোর্ট আসে কিনা সেটি চেক করার কথা বলছে ।  এবার আপনার বর্তমান ঠিকানা দিয়ে step-1 পূরণ করে কনটিনিউতে ক্লিক করুন । স্টেপ-২ তে আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে I’m a human  অপশনটিতে ক্লিক করলে একটি ক্যাপচা আসবে সেটি পূরণ করে কনটিনিউ করুন । স্টেপ-৩ তে আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে আবারও  I’m a human  এ অপশনে ক্লিক করে ক্যাপচা পূরণ করে ভেরিফাই করে ক্রিয়েট একাউন্ট এ ক্লিক করুন Enter your account information এ আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে মনে রাখবেন পাসওয়ার্ডটি যেন বড় হাতের অক্ষর , ছোট হাতের অক্ষর , বিশেষ কিছু চিহ্ন এর সমন্নয়ে হতে হবে তাছাড়া পাসওয়ার্ডটি গ্রহণযোগ্য হবে না । আপনার নাম দিবেন NID কার্ড অনুযায়ী । এখন given name / first name হচ্ছে নামের প্রথম অংশ আর surname হচ্ছে নামের শেষ অংশ । যেমন ; MST. MAHMUDA SULTANA এখানে MST. MAHMUDA (given name/ first name) আর  SULTANA (surname/ last name) I’m a human  এ ক্লিক করে ভেরিফাই করে ক্রিয়েট একাউণ্ট এ ক্লিক করুন।  Activate e-Passport Account

এ পর্যায়ে আপনার ই-মেইলে একটি মেইল যাবে । মেইল টিতে HERE অপশনে ক্লিক করতে হবে । এবার সাইন ইন করতে হবে । এখন আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস ও পাসওয়ার্ডটি দিয়ে  I’m a human  অপশনটি একটিভ করে সাইন ইন করতে হবে । Apply for a new passport অপশনটিতে ক্লিক করুন ।

 

এ পর্যায়ে পাসপোর্ট আর টাইপ চাইবে অর্থাৎ পাসপোর্টটি কেমন হবে ওরডিনারি না অফিসিয়াল যেটি হবে সেই অপশনে ক্লিক করে সেভ অ্যান্ড কনটিনিউ অপশনে ক্লিক করুন । পারসোনাল ইনফরমেশনে গিয়ে আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট করেন তাহলে  I am apply for myself অপশনটিতে ক্লিক করুন আর যদি অন্য কারো জন্য করে থাকেন তাহলে ক্লিক করার দরকার নাই । এখন আপনি যদি নিজের জন্য পাসপোর্ট করেন তাহলে আপনার পেশা , ধর্ম , কান্ট্রি কোড , মোবাইল নম্বর , কোন দেশে , কোন জেলায়  , কবে জন্মগ্রহণ করেছেন তা দিতে হবে । Select type of citizenship অর্থাৎ আপনি কোন সূত্রে দেশের নাগরিক তা সিলেক্ট  করতে হবে । যেহেতু আমরা জম্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক তাই  BY BIRTH  সিলেক্ট করে সেভ অ্যান্ড কনটিনিউ  তে ক্লিক করুন । এবার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা লিখে ফরম টি পূরণ করতে হবে । এরপর সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করুন । এবার  ID DOCUMENTS চাবে যদি আপনার আগে কোন পাসপোর্ট থাকে তাহলে  YES আর যদি না থাকে তাহলে  NO ক্লিক করুন । এখন  আইডেনটিফিকেশনের জন্য NID কার্ড এর  নাম্বার দিয়ে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউতে ক্লিক করুন । এরপরে পিতা-মাতার  NID কার্ড অনুযায়ী তথ্য গুলো লিখতে হবে । বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে তথ্য চাইলে আপনি যদি বিবাহিত হ্ন তাহলে ম্যারিড দিবেন এবং আপনরা স্ত্রী সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যেমন ; NID নাম্বার , জাতীয়তা ইত্যাদি । আপনি যদি সিঙ্গেল হন তাহলে আর এ সকল তথ্য দিতে হবে না । এখন আপনি কত পেজের , কত বছর মেয়াদী পাসপোর্ট নিবেন তা সিলেক্ট করুন । পাসপোর্টটি  স্বাভাবিক সময়ে নিতে চান না , দ্রুত নিতে চান সেটি সিলেক্ট করুন । আপনি যত দ্রুত পাসপোর্ট চাইবেন তত টাকা বেশি লাগবে । শেষ অপশন Delivery options & appointment এ আপনাকে দিন ও তারিখ ঠিক করে ওই নির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে কাগজ পত্র জমা দিয়ে আসতে পারব । 

সব পূরণ করা হয়ে গেলে সম্পূর্ণ তথ্য গুলো আবার আপনাকে চেক করতে বলবে । এটি খুব সাবধানে চেক করতে হবে কারণ একটি কিছু ভুল হলে সবকিছু গড়বড় হয়ে যাবে । চেক করার সময় যদি কিছু ভুল হয় তাহলে পাশে ইদিড অপশনে ক্লিক করে ঠিক করতে পারবেন ।

এবার পরপর দুইবার Confirm and proceed to payment অপশনে ক্লিক করে অনলাইন পেমেন্ট ও করতে পারেন আবার চালানের মাধ্যমেও টাকা জমা দিতে পারেন । চালানের মাধ্যমে টাকা পাঠালে ব্যাংক এশিয়া , ডাকা ব্যাংক ,  সোনালি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও এ – চালান এর মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারেন । পেমেন্ট সাবমিটেড হয়ে গেলে দুটি ফরম আমাদের ডাউনলড ও প্রিন্টিং করে রাখতে হবে একটি হল Print summary অপরটি হল  Download application form for printing   এ দুটি কাগজের সাথে আরও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি , জন্ম নিবন্ধন , জমাকৃত টাকার রশিদ  ইত্যাদি ।

    মেয়াদ কত বছর ?

ই-পাসপোর্ট এর মেয়াদ সাধারণত ৫-১০ বছর হয়। বয়স ভেদে এর মেয়াদ ঠিক করা হয় ।

     ফি কত টাকা লাগবে ?

বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট স্বাভাবিক সময়ে অর্থাৎ ২১ কার্যদিবসে পেতে হলে জমা দিতে হবে ,০২৫ টাকা। একই পাসপোর্ট এক্সপ্রেস ডেলিভারি অর্থাৎ ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ,৩২৫ টাকা এবং দুই কর্ম দিবসে পেতে হলে ,৬২৫ টাকা জমা দিতে হবে।১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ২১ কর্ম দিবসে পেতে হলে ,৭৫০ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে ,০৫০ টাকা এবং দুই কর্মদিবসে পেতে ১০,৩৫০ টাকা জমা দিতে হব। অন্যদিকে বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ২১ দিনে পেতে ৬৩২৫ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে ৮৬২৫ টাকা এবং দুই কর্মদিবসে পেতে ১২,০৭৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে।একই সংখ্যক পাতার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ২১ কর্ম দিবসে পেতে ,০৫০ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে ১০,৩৫০টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির মাধ্যমে মাত্র দুই কর্মদিবসে পেতে হলে ফি দিতে হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।

 

ই-পাসপোর্টে কী ভিসা লাগে ?

এমআরপি এর মতই ই-পাসপোর্টে ও ভিসার ব্যাবস্থা থাকবে । অর্থাৎ বিভিন্ন দেশের নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি বা অনলাইনে ভিসার শর্ত পূরণ করেই ভিসা নিতে হবে।

ভিসা কর্তৃপক্ষ বা দূতাবাসগুলো এই পিকেডি ব্যবহার করে আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে নিতে পারবে। এরপরে তারা বইয়ের পাতায় ভিসা স্টিকার, সিল দিতে পারবে বা বাতিল করে দিতে পারবে।

আজকের পোস্টটি অনেক বড় হলেও আপনাদের অনেক কাজে আসবে । আশা করি পোস্টটি আপনারা সকলেই মনোযোগ সহকারে পরবেন ।


 

 




 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ঢাকা ক্লিক নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url